তানিম আহমদ, স্টাফ রিপোর্টার,
মৌলভীবাজার থেকে
রক্তস্বল্পতায় আক্রান্ত এতিম রোগীর পাশে দাঁড়াল একঝাঁক মানুষ প্রমাণ করল, এখনও বেঁচে আছে মানবতা।
মৌলভীবাজারে ঘটল এক ব্যতিক্রমী ঘটনা, যা আবারও আমাদের মনে করিয়ে দিল, মানুষ মানুষের জন্য। শহরের শাহ মোস্তফা রোডে অবস্থিত মালাজা টাওয়ার মা ও শিশু হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সম্প্রতি এক রক্তস্বল্পতায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় যে মানবিক ভূমিকা রেখেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়।
রোগীটি ছিল এক এতিম যুবক, যার হিমোগ্লোবিন মাত্রা মাত্র ৬ পয়েন্টে নেমে এসেছিল। তার রক্তের গ্রুপ ছিল B-নেগেটিভ একটি বিরল গ্রুপ, যা পাওয়া কঠিন। সংকটজনক মুহূর্তে রোগী পড়েন চরম অসহায়তায়। কিন্তু তখনই এগিয়ে আসে মা ও শিশু হাসপাতাল পরিবার।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রক্ত দেওয়ার প্রসেসিং খরচ বহন করে, যা সচরাচর দেখা যায় না। শুধু তাই নয়, স্টাফদের আন্তরিকতা, দ্রুত সাড়া, এবং মানবিক ব্যবহারে রোগী ও তার আশেপাশের মানুষ হয়ে পড়ে আবেগাপ্লুত।
বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে হয় হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো: শাহিন আহমেদ এবং এমডি কল্যাণ বৈদ্য কে, যাঁদের তত্ত্বাবধানে রোগী পেয়েছে যথাযথ চিকিৎসা ও মানসিক সান্ত্বনা।
এই ঘটনার সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তটি ছিল যখন মইনুদ্দীন নামের একজন যুবক স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন। তিনি জানতেন, তার নিজস্ব একটি অপারেশন নির্ধারিত রয়েছে মাসখানেক পরে। তবুও, নিজের প্রয়োজনের চেয়ে বড় মনে করেছেন একজন এতিমের জীবন বাঁচানোকে।
এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়
মানবতা হারিয়ে যায়নি, বরং আজও তা আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে নিঃশব্দে, নিবেদনে।
মইনুদ্দীন ভাইয়ের মতো মানুষগুলোই আমাদের সমাজের আলোকবর্তিকা, যাঁরা নিঃস্বার্থভাবে অন্যের পাশে দাঁড়ান সংকটময় সময়ে।
মৌলভীবাজার মা ও শিশু হাসপাতালের এই মহৎ উদ্যোগ,কর্তৃপক্ষ ও স্টাফদের আন্তরিকতা, এবং মইনুদ্দীন ভাইয়ের আত্মত্যাগ সবকিছু মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে মানবতার এক অনন্য নজির, যা সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়ুক অনুপ্রেরণা হয়ে।
সরোয়ার হোসেন কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত