কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি।
উখিয়ায় এক প্রতিবন্ধী ইজিবাইক চালককে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বালুখালী এলাকার মাহমুদুল হক নামের এক ব্যক্তি ৪০ হাজার পিস ইয়াবা দিয়ে প্রতিবন্ধী রুহুল আমিনকে ফাঁসিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে ভুক্তভোগীর পরিবার।
সোমবার (২১ এপ্রিল) উখিয়া প্রেসক্লাব কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীর ছোট ভাই আব্দু সালাম ছোটন বলেন, গত ১৮ মার্চ রাতে বালুখালী বাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কিছু চাল আনার কথা বলে আমার ভাইয়ের ইজিবাইক (টমটম গাড়ি) ২০০ টাকা দিয়ে ভাড়া করেন মাহমুদুল হক। ক্যাম্পে যাওয়ার সময় গাড়িতে কিছু খালি চালের বস্তাও নেওয়া হয়৷ ৯নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সড়কে ঢুকতেই হঠাৎ কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল সামনে এসে পথ আটকায়৷ এরপরে তল্লাশি করে খালি চালের বস্তা থেকে ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে। তখন গাড়িতে মাহমুদুল হকের সহযোগী বালুখালীর আজিজ, রফিক ও কোম্পানি নুরু সালামও ছিলেন৷ তাদের কাউকে গ্রেপ্তার না করে আমার ভাই প্রতিবন্ধী রুহুল আমিনকে নিয়ে যায় তারা৷ পরেরদিন তাকে ৪০ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷
তিনি আরও বলেন, ভাঙাচোরা ঝুপড়ি ঘরে স্ত্রী ও ৩ সন্তান নিয়ে কোনোরকম বসবাস করে আসছিলেন প্রতিবন্ধী রুহুল আমিন৷ তিনি ভাড়ায় নেওয়া ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাতেন৷ তার গাড়িতে ইয়াবা তুলে নিয়ে যাচ্ছে সেটি আমার ভাই জানতেন না৷ ইয়াবার প্রকৃত মালিকদের ছেড়ে দিয়ে প্রতিবন্ধীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে৷ এটি তদন্ত করে মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি৷
রুহুল আমিনের বড়বোন রোজিনা আক্তার বলেন, বালুখালীর মাহমুদুল হক পুরাতন ইয়াবা কারবারি, তার ইয়াবার চালান আমার ভাইয়ের গাড়িতে রেখে ফাঁসিয়েছেন৷ কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত দোষী মাহমুদুল হক সহ সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি পাশাপাশি আমার প্রতিবন্ধী ভাইকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি৷
প্রতিবন্ধী রুহুল আমিনের স্ত্রী রাশেদা বেগম বলেন, আমি ৩টি বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাবো কূলকিনারা হারিয়ে ফেলেছি৷ আমার স্বামী নিয়মিত টিমটিম চালিয়ে আমাদের ভরনপোষণ চালাতেন কিন্তু হঠাৎ করে বালুখালীর ইয়াবা কারবারি মাহমুদুল হক ৪০ হাজার ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন৷ আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি৷ জীবনের ভয়ে এতদিন চুপচাপ ছিলাম৷ আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি দিয়ে আসছিল যাতে আমরা কোথাও মাহমুদুল হকের ব্যাপারে মুখ না খুলি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাহমুদুল হকের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি৷